মুর্শিদাবাদে একদিন

প্রকাশঃ জানুয়ারি ২৩, ২০১৫ সময়ঃ ৪:০০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:০০ অপরাহ্ণ

 

 

mursidabad1ইতিহাস, ঐতিহ্য মানুষকে টানে সবসময়। প‍ুরনোর মধ্যে খুঁজে পেতে চায় নতুন কিছু। শিকড়ের টান মানুষের চিরাচরিত। তাই ঐতিহাসিক স্থান, স্থাপনা দর্শন হয়ে ওঠে ঘোরাঘুরি বা পর্যটনের অন্যতম অনুষঙ্গ।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ শহরের প্রতিষ্ঠাতা প্রাচীন বাংলার নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ। বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার রাজধানী হিসেবে এ শহরের অনেক নাম। রয়েছে পর্যটনের জন্য খ্যাতিও।

তবে পর্যটকদের বেশি আকৃষ্ট করবে তিনতলা বিশিষ্ট ‘হাজার দুয়ারী প্যালেস মিউজিয়াম’।

musidabad2
 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রতিটি কক্ষের কারুকার্য অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। এর গ্রাউন্ড ফ্লোরে’ রয়েছে অস্ত্রাগার, অফিস, কাছারি, রেকর্ডরুম। অস্ত্রাগারে প্রায় ২ হাজার ৬০০ অস্ত্র সজ্জিত রয়েছে বলে জানা যায়। এগুলো পলাশীযুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছিলো বলে প্রচলিত রয়েছে। এখানে যেমন সংরক্ষিত রয়েছে নবাব আলীবর্দীর ব্যবহৃত তলোয়ার, বহুনল বিশিষ্ট বন্দুক তেমনি রয়েছে নাদির শাহ বা মীর কাশেমের ছোরা, অস্ত্র ও বিভিন্ন আকারের কামান।

 

musidabad3

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দুই ও তিনতলায় রয়েছে ‘আর্ট গ্যালারি ও লাইব্রেরি’।

লাইব্রেরি কক্ষে ছোট বড় আকারের অসংখ্য চুক্তিপত্র, নাটক, নভেল, তাম্রলিপি, দলিল-দস্তাবেজ, ইতিহাসসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বইপত্র রয়েছে।

আইন-ই-আকবরী (আবুল ফজল) ও হারুন-উর-রশীদের হস্তলিখিত কোরান শরীফ এখানে সংরক্ষিত আছে।


২০ কেজি ওজনের তিন হাত বাই দুই হাত আকৃতির সুবিশাল অ্যালবামটি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বাধ্য।

সমগ্র কেল্লা কম্পাউন্ডের আয়তন ৪১ একর। এই হাজার দুয়ারী প্যালেসটির সম্মুখভাগের দু’পাশে রয়েছে মনোরম ফুলের বাগান।

একতলা প্যালেসের সম্মুখভাগের সিঁড়িটি ‘দরবার কক্ষ’ পর্যন্ত উঠেছে। হাজার দুয়ারী প্যালেস মিউজিয়াম’ প্রাসাদটি শুক্রবার বন্ধ থাকে। প্রবেশ মূল্য দশ রুপি।

হাজার দুয়ারী প্যালেস মিউজিয়াম’ প্রাসাদটির বিপরীত দিকে ‘ইমাম বাড়া’ অবস্থিত। পবিত্র আশুরা উপলক্ষে মহরমের প্রথম দশদিন এ সুরম্য ভবন জনসাধারণের প্রবেশের জন্য খোলা থাকে।

এ সময় এখানে মেলাও বসে। বর্তমানে দু’টি স্থাপত্য ভারত সরকারের আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে বিভাগের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এছাড়া সেখানে বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখতে পারেন। এরমধ্যে কাঠগোলা বাগান, নশীপুর রাজবাটি, আজিমুন্নেসা সমাধি, ইংরেজ সমাধি, ডাচ সমাধি, জগৎশেঠের বাড়ি, সিরাজের প্রাসাদ হিরাঝিল, মতিঝিল, কাটরা/চক মসজিদ, রানী ভবানী মন্দির উল্লেখযোগ্য।

একটু দূরেই  কালের সাক্ষী হিসেবে রয়েছে পলাশীর প্রান্তর ও আম বাগান। মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন স্থাপনা ঐতিহ্যবাহী ‘টমটম’ (ঘোড়ার গাড়ি)-এ চড়ে অবলোকন করা যাবে।

যেভাবে যাবেন
কলকাতা থেকে লালগোলা ট্রেনে মুর্শিদাবাদে আসা যায়। যারা উত্তরবঙ্গ থেকে ট্রেনে যাবেন তাদের আজমীরগঞ্জ স্টেশনে নেমে ভাগিরতী নদী পার হয়ে টমটম অথবা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় মুর্শিদাবাদে যেতে হবে।

এছাড়া বাসেও আসা যায়। বাসে এলে বহরমপুরে নেমে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় মুর্শিদাবাদে আসতে হবে।

৩০০ থেকে ৪০০ রুপিতে টমটম অথবা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রিজার্ভ করা যায়। এতে অল্প সময়েই মুর্শিদাবাদের সব ঐতিহাসিক স্থান দেখতে পারবেন।


আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G